ভিটামিন সি এমন একটি পুষ্টি উপাদান যা মানব শরীরের জন্য খুবই জরুরি। কারণ রক্ত চলাচল থেকে শুরু করে শিরা ও ধমনীর কর্মক্ষমতা বজায় রাখা, কোষ গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি সব কিছুতেই ভিটামিন সি-এর উপস্থিতি অপরিহার্য। ভিটামিন সি অত্যন্ত উচ্চ মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বিভিন্ন দূষণ থেকে রক্ষা করে। নানা ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। এছাড়া এটিপি, ডোপেমিন ও পেপটাইন হরমোনের ক্ষেত্রেও ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মোটকথা আমাদের শরীরের চালিকাশক্তি বজায় রাখার জন্য ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ভিটামিন সি-এর প্রাত্যহিক চাহিদা হলো ৬০ মিলিগ্রাম। এই ভিটামিন সি আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবার থেকেই পেয়ে থাকি। ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উত্সের কথা ভাবতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে লেবুর ছবি! কিন্তু জানেন কি, সর্বোচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ প্রথম দশটি খাবারের মধ্যেই লেবুর স্থান নেই? এটা সত্যি! অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? লেবুর চেয়ে আরো অনেক বেশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আসুন জেনে নিই সারাবিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ ভিটামিন সি যুক্ত দশটি খাবারের কথা –
কাঁচা মরিচ :
সর্বোচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের তালিকার প্রথমেই রয়েছে আমাদের অতি চেনা কাঁচা মরিচ। আমরা স্যুপ, সালাদ, ভর্তার সাথে বা এমনিতেই কাঁচা মরিচ খেয়ে থাকি। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মরিচে রয়েছে ২৪২.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। এর পরেই রয়েছে লাল মরিচের স্থান। প্রতি ১০০ গ্রাম লাল মরিচে রয়েছে ১৪৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
পেয়ারা :
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পেয়ারা। পেয়ারা প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে ২২৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। একটি মাঝারি আকারের পেয়ারায় প্রায় ১২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। তবে পেয়ারার জাতভেদে এর পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।
বেল মরিচ :
বেল মরিচ পাস্তা সস বা পিজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি মেক্সিকান মরিচ। প্রতি ১০০ গ্রাম বেল মরিচে রয়েছে ১৮৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
টাটকা ভেষজ :
বেশির ভাগ ভেষজই নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর। সেটা তাজা হোক অথবা শুকনো। তবে তাজা থাইম ও পোর্সলেতে রয়েছে আর সব ভেষজ থেকে বেশি ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম থাইমে রয়েছে ১৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং প্রতি ১০০ গ্রাম পোর্সলেতে রয়েছে ১৩৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
গাঢ় সবুজপাতা এবং শাক :
আমার খাবার হিসেবে যেসব কাঁচা পাতা খাই যেমন পুদিনা বা লেটুস তেমনই একটি হলো Kale। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম Kaleতে রয়েছে ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। শাকের ভেতরে সরিষা শাক সর্বোচ্চ ভিটামিন সি যুক্ত। প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষা শাকে রয়েছ ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
ব্রকোলি :
সবুজ টাটকা ব্রকোলি ভিটামিন সি-এর আরেকটি ভালো উত্স। প্রতি ১০০ গ্রাম ব্রকোলিতে রয়েছে ৯৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
কিউয়ি ফল :
কিউয়ি ফল ভিটামিন সি-এর আরেকটি উত্কৃষ্ট উত্স। প্রতি ১০০গ্রাম কিউয়িতে রয়েছে ৯৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
পেঁপে :
আমাদের অতি পরিচিত ফল পেঁপে রয়েছে অষ্টম স্থানে। পেঁপেকে ভিটামিন এ এবং ফোলেটের আধার হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হলেও এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে রয়েছে মিলিগ্রাম ৬২ ভিটামিন সি।
কমলা :
কমলার খাদ্যযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রাম অংশে রয়েছে ৫৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
স্ট্রবেরী :
চমত্কার স্বাদের ফল স্ট্রবেরী এমনিতে খাওয়ার পাশাপাশি কেক, আইসক্রিম, ডেজার্ট এবং আরো বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়ে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরীতে রয়েছে ৫৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।