সাধারণত গলায় ব্যথা হলে (টনসিলের সমস্যা) তা যদি যথাযথ ও সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসা না করা হয় তাহলে এর থেকে বাতজ্বর দেখা দেয়। বাতজ্বর একটি সংক্রামক রোগ। বাতজ্বরের শুরুটা সাধারণত জীবাণুর মাধ্যমে গলায় সংক্রমণের ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে।
বাতজ্বর হয়েছে কি করে বুঝবেন
বাতজ্বরের উপসর্গ গুলো সাধারণত ভিন্ন হয়ে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে অনেক ধরনের আবার কারো ক্ষেত্রে রোগের অল্পকিছু উপসর্গ দেখা দেয়। রোগ চলাকালীন সময়ে উপসর্গের পরিবর্তন ও হতে পারে।
বাতজ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গ
- জ্বর।
- অস্থিসন্ধিতে মৃদু বা তীব্র ব্যথা যা প্রায়ই পায়ের গোড়ালি, হাঁটু, কনুই অথবা হাতের কবজি এবং কখনো কখনো কাঁধ, কোমড়, হাত, পায়ের পাতায় হয়ে থাকে।
- ব্যথা এক অস্থিসন্ধি থেকে আরেক অস্থিসন্ধিতে ছড়িয়ে পড়ে।
- লাল, উষ্ণ অথবা ফোলা অস্থিসন্ধি।
- চামড়ার নিচে ক্ষুদ্র ব্যথাহীন পিণ্ড।
- বুকে ব্যথা।
- বুক ধড়ফড় করা।
- অল্পতে ক্লান্ত বা দুবর্ল বোধ করা।
- শ্বাসকষ্ট।
- চ্যাপ্টা অথবা সামান্য ফোলা ব্যথাহীন এবড়োথেবড়ো কিনারা বিশিষ্ট লালচে দানা।
কখন ডাক্তার দেখাবেন
শিশুর গলায় ব্যথা হলে বা টনসিলের সমস্যা হলে এর লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। উপযুক্ত চিকিৎসা বাতজ্বর অনেকখানি প্রতিরোধ করে। রোগের যেসব লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্র শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে সেগুলো হলো-
- ঠাণ্ডার উপসর্গ ছাড়াই নাক দিয়ে পানি পড়া।
- গলায় ব্যথার সাথে গলায় ফোলা ভাব থাকা।
- কোন কিছু খেতে সমস্যা হওয়া।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া যা বিশেষ করে ৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে দেখা যায়।
- এছাড়া উপরের লক্ষণসমূহ ছাড়াও গিরা বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
কি ধরনের চিকিৎসা আছে
- এ্যান্টিবায়োটিক সেবন।
- জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথার ঔষধ খাওয়া।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
কি ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন
- শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
- রক্তের পরীক্ষা।
- ইসিজি পরীক্ষা।
- ইকোকার্ডিওগ্রাফী।
বিশ্রাম ও বাড়তি সতর্কতা
- ব্যথা এবং রোগের অন্যান্য উপসর্গ ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে প্রয়োজনে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে।
- রোগীকে অন্যান্য কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাতজ্বর কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়
প্রথম থেকেই গলায় সংক্রমণের সঠিক চিকিৎসা করলে বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কম হয় বা একেবারেই থাকে না।