মেরুদন্ডের ঘাড়ের অংশে অনেকসময় বিশেষ ক্ষয় ও অবাঞ্ছিত হাড়ের সৃষ্টি হয়। এটা একটি প্রাকৃতিক ক্ষয় প্রক্রিয়া। ৩০ বা তদূর্ধ্ব এমনকি ২০ বছর বয়সেও এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। দুইটি হাড়ের (কশেরুকা) মধ্যবর্তী অংশের ডিস্ক বা চাকতির মধ্যবর্তী অংশের দুরত্ব খুব বেশি কমে যায়। দুই কশেরুকার মাঝ দিয়ে আমাদের স্নায়ুনালী গুলি বের হয়। এই ক্ষত বা অবাঞ্চিত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অংশ আশেপাশের মাংস, স্নায়ু বা ঝিল্লীতে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে ঐ অংশ সমূহে তীব্র ব্যথা হয়। এই ব্যথা বাহু এমনকি হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে ।
রোগের কারণ
- হঠাৎ করেই তীব্র অথবা ধীরে ধীরে এ ব্যথা শুরু হতে পারে
- রোগী ঘাড়ের পিছনে ব্যথা অনুভব করেন
- ঘাড় নাড়াতে অসুবিধা হয়, সামনে ঝুঁকতে বা পাশে ফিরতে কষ্ট হয়
- ক্ষেত্র বিশেষে কাশি দিতে ইলেক্ট্রিক শকের মতো ব্যথা হয়। খুব বেশি ব্যথার ক্ষেত্রে রোগীর হাত, মাথার উপর তুলে রাখতে আরামবোধ করে
- অনেকের ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়
- এ রোগে যদি স্নায়ু আক্রান্ত হয় তবে একটি হাত বা তার অংশ বিশেষে ব্যথা থাকতে পারে
কারা বেশি আক্রান্ত হন
- সাধারণত ৩০ বছরের বেশী বয়সের যেকোনো বয়সী পুরুষ বা মহিলা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
- বিশেষ করে যারা ঘাড় ঝুঁকিয়ে কাজ করেন বা ঘাড়ের নড়াচড়া বেশি হয় এমন কাজ করেন (যেমন সার্জন, দাঁতের ডাক্তার, অভিনেতা, গাড়ির ড্রাইভার প্রমুখ) তাদের এ রোগ বেশি হয়।
- দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত অভ্যাসের তারতম্যের জন্যও এটি হতে পারে। যেমন দীর্ঘদিন মাথার নিচে মোটা বালিশ ব্যবহার করলে বা শুয়ে, ঝুঁকে বই পড়লে কিংবা এসি/নন-এসি পরিবেশে ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করলে এ রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
রোগ নির্ণয়
উপসর্গ এবং লক্ষণ বিবেচনায় ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা যায়। ঘাড়ের এক্সরে এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
চিকিৎসা
- তীব্র ব্যথায় অবস্থাভেদে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে
- প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে
- ঘাড়ের মাংশপেশীতে থার্মোথেরাপি, সর্টওয়েভ ডায়থার্মি ও ট্র্যাকশন প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায়। ব্যথা কমে গেলে বেশ কিছুদিন ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে যাতে পরবর্তী সময়ে আবার আক্রান্ত না হয়
- ক্ষেত্রবিশেষে সার্ভাইক্যাল কলার পরতে হতে পারে
প্রতিরোধ
যিনি একবার সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইসিসে আক্রান্ত হয়েছেন তাকে যে বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে সেগুলো হলোঃ
- নিয়মিত ঘাড়ের বিশেষ ব্যায়াম
- শক্ত সমান বিছানায় এবং পাতলা বালিশে শোয়ার অভ্যাস করতে হবে
- লেখাপড়ার কাজে ‘শূন্য’ ডেক্স ব্যবহার করতে হবে (শূন্য ডেক্স হলো যেখানে পিঠ সোজা রেখে হাত বুক বরাবর রেখে লেখা যায়)
- গোসলে গরম পানি ব্যবহার
- ঘাড়ে কোনো ওজন বহন করা যাবে না
- কোনা প্রকার ম্যাসাজ ও মালিশ করা যাবে না
- ঠান্ডা থেকে দূরে থাকতে হবে
এসব ব্যবস্থা যথাযথভাবে পালনের পরও যদি ঘাড়ে ব্যথা হয় তাহলে অবহেলা না করে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ঘাড়ের ব্যথা/ হাড়ের ব্যথা কেন হয়?
- হঠাৎ করেই তীব্র অথবা ধীরে ধীরে এ ব্যথা শুরু হতে পারে
- রোগী ঘাড়ের পিছনে ব্যথা অনুভব করেন
- ঘাড় নাড়াতে অসুবিধা হয়, সামনে ঝুঁকতে বা পাশে ফিরতে কষ্ট হয়
- ক্ষেত্র বিশেষে কাশি দিতে ইলেক্ট্রিক শকের মতো ব্যথা হয়। খুব বেশি ব্যথার ক্ষেত্রে রোগীর হাত, মাথার উপর তুলে রাখতে আরামবোধ করে
- অনেকের ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়
- এ রোগে যদি স্নায়ু আক্রান্ত হয় তবে একটি হাত বা তার অংশবিশেষে ব্যথা থাকতে পারে
ঘাড়ের ব্যথা/ হাড়ের ব্যথার চিকিৎসা কি?
- তীব্র ব্যথায় অবস্থাভেদে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে
- প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে
- ঘাড়ের মাংশপেশীতে থার্মোথেরাপি, সর্টওয়েভ ডায়থার্মি ও ট্র্যাকশন প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া যায়। ব্যথা কমে গেলে বেশ কিছুদিন ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে যাতে পরবর্তী সময়ে আবার আক্রান্ত হতে না হয়।
- ক্ষেত্রবিশেষে সার্ভাইক্যাল কলার পরতে হতে পারে।