কৃমি

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

কৃমি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। সাধারণত শিশুদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় তবে বড়দেরও হতে পারে।

কৃমি কি

কৃমি হলো এক ধরণের পরজীবি যা অন্ত্রে বাস করে। কিছু কৃমি ডিম্বাণু হিসেবে মানুষের মুখের মাধ্যমে প্রবেশ করে। আবার কিছু লাভা হিসেবে ত্বকের মাধ্যমে প্রবেশ করে। কৃমি অনেক সময় মানুষের যকৃত এবং অন্য অঙ্গতেও আক্রমণ করতে পারে।

কৃমির প্রকারভেদ

কৃমি কয়েক প্রকারের/ধরণের হয়: যেমন-

  • গোল কৃমি : এগুলো সাধারণত গোল, পাতলা, সাদা বা গোলাপী রঙের হয় এবং ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়।
  • সুতা কৃমি  : এগুলো সুতার মত, ছোট, পাতলা এবং সাদা রঙের হয়।
  • বক্র কৃমি : এগুলো আকারে খুবই ছোট, গারো গোলাপী রঙের হয়। এগুলো খালি চোখে দেয়া যায় না।
  • ফিতা কৃমি : এগুলো ২-৩ মিটার লম্বা এবং সমান হয়।

কৃমির জীবাণু কিভাবে ছড়ায়

  • দূষিত খাবার এবং পানি গ্রহণের ফলে
  • কৃমিতে আক্রান্ত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে
  • মাটি থেকে শরীরের চামড়ার মাধ্যমে

কি ধরণের চিকিৎসা আছে

  • প্রতি ছয়মাসে বা বছরে শিশুদের কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  • শিশুকে খাওয়ানেরা পাশাপাশি বাড়ীর সবাইকে কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পাশাপাশি ডাক্তারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হবে

কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

  • খাবার ও পানি সবসময় নিরাপদ ও পরিষ্কার হতে হবে
  • খাবার খাওয়া ও তৈরি করার আগে, খাবার পরিবেশনের সময়, খেলাধূলা করার পর এবং পায়খানা ব্যবহারের পর হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুতে হবে।
  • রান্নার সময় ভালোভাবে শাক সবজি, মাছ, মাংস ধুয়ে রান্না করতে হবে।
  • রান্না করা খাবার ভালোমত ঢেকে রাখতে হবে
  • পায়খানা (Toilet) সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে
  • হাতের নখ সব সময় ছোট এবং পরিষ্কার রাখতে হবে
  • বাইরে বের হওয়ার সময় জুতা বা স্যান্ডেল পড়তে হবে

কৃমি হওয়ার কারণগুলি কি কি ?

বেশ কিছ কারণে কৃমি হয় : যেমন-

  • দূষিত খাবার খেলে এবং দূষিত পানি পান করলে
  • অসুস্থ পশুর মাংস খেলে
  • শাক-সবজি, মাছ, মাংস না ধুয়ে রান্না করলে এবং খেলে
  • খোলা জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ করলে
  • বাচ্চারা খোলামেলা মাঠে, ধূলাবালিতে খেলার পর হাত-পা ভালোমত পরিষ্কার না করলে
  • অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে, রুমাল ব্যবহার করলে
  • মলমূত্র ত্যাগের পর হাত ভালোমত না ধুলে

কৃমিতে আক্রান্ত হলে কি কি জটিলতা দেখা দিতে পারে ?

কৃমিতে আক্রান্ত  হলে নিচের জটিলতাগুলো দেখা দিতে পারে :

  • পুষ্টিহীনতা ও এর ফলে সৃষ্ট রক্তশূণ্যতা
  • শরীরের বৃদ্ধি সহজে ঘটেনা
  • বাচ্চাদের পেট ফুলে যায়
  • ফ্যাকাসে এবং দূর্বল হয়ে যাওয়া
  • তীব্র পেট ব্যথা
  • কোন কিছু শিখার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতিগুলো কি কি ?

সঠিকভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতিগুলো হলো :

  • হাত এবং কবজি পানি দিয়ে ভালোমত ভিজাতে হবে
  • হাতে সাবান নিয়ে দুই হাত ভালোমত ঘষতে হবে
  • বাম হাতের উপর ডান হাতের তালু এবং ডান হাতের উপর বাম হাতের তালু দিয়ে ভালোমত ঘষতে হবে
  • প্রতিটি আঙ্গুলের মাঝে এবং নখের নিচে ভালোমত পরিষ্কার করতে হবে
  • হাত হালকাভাবে মুষ্টিবদ্ধ (Fist) করে আঙ্গুলের পিছনে ভালোমত ঘষতে হবে
  • ডান হাত দিয়ে বাম হাতের বুড়ো আঙ্গুল ভালোমত ধরে ঘষতে হবে। একইভাবে বাম হাত দিয়ে ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল ধরে ঘষতে হবে।
  • হাতের তালুর উল্টা দিক দিয়ে আঙ্গুলের ডগাগুলো পরিষ্কার করতে হবে
  • পানি দিয়ে আলতো করে হাত ভালোভাবে ধুতে হবে
  • পরিষ্কার কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে শুকাতে হবে

পানি এবং খাবার নিরাপদ রাখার উপায়গুলো কি কি ?

পানি এবং খাবার নিরাপদ রাখার উপায়গুলো হলো :

  • কাঁচা শাকসবজি (যেগুলো রান্না হবে না) ও ফলমূল খাওয়ার আগে ভালোমত ধুতে হবে
  • খাবার তৈরির আগে ভালোমত হাত ধুতে হবে
  • রান্না করা এবং রান্না ছাড়া খাবার আলাদা করতে হবে
  • রান্নার সময় পানি এবং অন্যান্য সরঞ্জাম পরিষ্কার ও নিরাপদ হতে হবে
  • খাবার ভালোমত রান্না করতে হবে
  • মাছি এবং অন্য কিছু যেন খাবার দূষিত করতে না পারে সেজন্য খাবার এবং পানি ভালোমত ঢেকে রাখতে হবে
  • সঠিক তাপমাত্রার খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করতে হবে

পায়খানা ব্যবহারের সঠিক নিয়মগুলো কি কি ?

পায়খানা ব্যবহারের সঠিক নিয়মগুলো হলো :

  • টয়লেট বা পায়খানায় প্রস্রাব-পায়খানা ত্যাগ করতে হবে
  • পায়খানা ব্যবহারের পর সাবান এবং পানি দিয়ে ভালোমত হাত পরিষ্কার করতে হবে