ডায়াবেটিস রোগের জরুরী অবস্থা
ক) রক্তে শকর্রার স্বল্পতা(হাইপোগ্লাইসেমিয়া)-রক্তে শর্করার পরিমাণ কমানোর জন্য ট্যাবলেট বা ইনসুলিন দেয়া হয়। ট্যাবলেট খাওয়ার বা ইনসুলিন নেয়ার ফলে যদি শর্করার পরিমাণ খুব কমে তাহলে শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- প্রতিক্রিয়ার লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:
- অসু্স্থ বোধ করা
- খুব বেশী খিদে পাওয়া
- বুক ধড়ফড় করা
- বেশী ঘাম হওয়া
- শরীর কাঁপতে থাকা
- শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা
- অস্বাভাবিক আচরণ করা
- অজ্ঞান হওয়া
কেন এবং কখন এই সব লক্ষণ দেখা দেয়
- ঔষধের (ট্যাবলেট বা ইনসুলিন) পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশী হলে
- ইনসুলিন ও সিরিঞ্জ একই মাপের না হলে
- বরাদ্দের চেয়ে খাবার খুব কম খেলে বা খেতে ভুলে গেলে
- ইনসুলিন নেয়ার পর খুব দেরী করে খাবার খেলে
- হঠাৎ বেশী ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম করলে
- বমি বা পাতলা পায়খানার জন্য শর্করা অন্ত্রনালী হতে শোষণ না হলে
- রক্তে শর্করার অভাব হলে কি করা উচিৎ
প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়া মাত্র রোগীকে চা-চামচের ৪ থেকে ৮ চামচ গ্লুকোজ বা চিনি এক গ্লাস পানিতে গুলে খাইয়ে দিতে হবে বা । রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে মুখে কিছু খাওয়ার চেষ্টা না করে গ্লুকোজ ইনজেকশন দিতে হবে বা তাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
খ) ডায়াবেটিক কোমা-ইনসুলিন নির্ভর রোগীদের সাধারণত ডায়াবেটিক কোমা হয়ে থাকে। অপর্যাপ্ত ইনসুলিন নিলে বা ইনসুলিন নির্ভরশীল রোগী ইনসুলিন একেবারে না নিলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে বিপর্যয় দেখা দেয়। ইনসুলিনের অভাবে রক্তের শর্করা শরীরের কাজে লাগতে পারে না, তখন তাপ ও শক্তির জন্য দেহের সঞ্চিত চর্বি ব্যবহার হতে থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত ইনসুলিনের অভাবে এই চর্বি অতিরিক্ত ভাঙ্গার ফলে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ ও অম্ল রক্তে বেড়ে যায়, ফলে এসিটোন নামক একটি কিটোন বডির পরিমাণ বেশী মাত্রায় বেড়ে গিয়ে অম্লতার জন্য রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। এই অবস্থাকে ডায়াবেটিক কোমা বলে।
- ডায়াবেটিক কোমার লক্ষণ
- প্রস্রাবে শর্করার পরিমাণ খুব বেশী বেড়ে যাওয়া
- খুব বেশী পিপাসা লাগা
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- অত্যন্ত বেশী ক্ষুধা লাগা
- খুব অসু্স্থ বোধ হওয়া
- বমি ভাব হওয়া
- দুর্বলতা বোধ হওয়া
- ঝিমানো
- শ্বাস কষ্ট হওয়া
- দ্রুত শ্বাস নেওয়া
- মাথা ধরা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- নিস্তেজ বোধ হওয়া
- শ্বাসে এসিটোনের গন্ধ বের হওয়া
এই লক্ষণ গুলি দেখা দিলে
- শরীরে পানি স্বল্পতা কমানোর জন্য অতিরিক্ত লবণ মিশ্রিত পানি খেতে হবে।
- ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে হবে
- প্রস্রাবে কিটোন বডি আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে
- অবিলম্বে ডাক্তারের সহায়তা নিতে হবে