বর্তমান সময়ে যেসব রোগের প্রকোপ দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো কিডনিতে পাথর হওয়া। গত পাঁচ বছরে এই রোগ অত্যন্ত বেড়ে গেছে। অনিয়ন্ত্রিত জীবন, অনিয়ম ইত্যাদি নানা কারণ এর কারণ। শুধু তাই নয়, এসব অসুখ নিয়ে সচেতনও হচ্ছে না মানুষ! বেশিরভাগ রোগিই একেবারে শেষ সময় চিকিৎসা করতে আসেন। তখন আর অস্ত্রোপচার করা ছাড়া উপায় থাকে না। ভালো হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।
কিডনিতে পাথর জমা হওয়ার সমস্যাকে অনেকেই ততটা গুরুত্ব দেন না, কিন্তু উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা না পেলে এই অসুখ মারণরোগে পরিণত হতে পারে। এই পাথর মূলত দুই ধরনের। ‘সাধারণ কারণে হওয়া পাথর’ এবং ‘অন্য কোনো অসুখজনিত কারণে হওয়া পাথর’।তবে কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় সহজেই। আসুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মগুলো:
০১. শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান: কিডনির কাজ শরীরের বর্জ্য ছেঁকে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিনকে (বিষাক্ত পদার্থ) সরানো। তাই শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি না খেলে কিডনির পক্ষে সে কাজ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে সে সব বর্জ্য জমে পাথর জমার সম্ভাবনাও বাড়ে।
০২. লবণ কম খান: খাবারে অতিরিক্ত লবণ, বিশেষ করে কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আজই তা পাল্টে ফেলুন। লবণে সোডিয়ামকে কিডনি বের করে দিতে পারে না। তাই সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর জমে।
০৩. বদহজম হতে দেবেন না: হজমে সমস্যা আনতে পারে এমন খাবার খাবেন না। হজমের গোলমাল কিডনিতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বর্জ্য নিষ্কাশনে বাধা তৈরি হয় ও পাথর জমার সম্ভাবনা বাড়ে।
০৪. পেইন কিলারকে না বলুন: অনেকেরই ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এই ওষুধের অন্যতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিডনিতে সমস্যা তৈরি করা। কাজেই ঘনঘন এমন ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বদলান।
০৫. প্রস্রাব চেপে রাখবেন না: ঢাকা শহরে নেই পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট। ছেলেরা দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে পড়লেও মেয়েরা মহাবিপদে পড়ে যায়। কিন্তু কিডনির অসুখের অন্যতম প্রধান কারণ প্রস্রাব চেপে রাখা। এতে মূত্রনালী আর যৌনাঙ্গে সংক্রমণ হওয়ার ভয়ও থাকে।
০৬. অসুখজনিত সমস্যা: সাধারণ স্টোন ছাড়াও অক্সালেট স্টোন, ইউরিক অ্যাসিড স্টোন, মেয়েদের ক্ষেত্রে স্ট্রভাইট স্টোন হয়। এসব অসুখজনিত কারণে স্টোন এড়াতে অসুখের নিয়মিত চেক আপ, নিয়ম মেনে ওষুধ ও খাদ্যগ্রহণ করুন। বারবার মূত্রনালীতে সংক্রমণ থেকে হওয়া স্ট্রভাইট স্টোন এড়াতে নিয়ম মেনে সংক্রমণের চিকিৎসা করান।