রক্তে হিমোগ্লোবিন বা লোহিত কণিকার পরিমাণ কমে গেলে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা রোগ হয়। তবে বিভিন্ন বয়সে স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের পরিমাণে তারতম্য থাকে। শিশুর বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী তা আলাদা হতে পারে।
শিশুর রক্তশূন্যতার কারণ খুঁজতে হলে তার বয়স, লিঙ্গ, জাতিগোষ্ঠী, খাদ্যতালিকা, ওষুধ সেবনের ইতিহাস, দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ, ভ্রমণবৃত্তান্ত, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য জেনে নেওয়া দরকার। একই সঙ্গে পরিবারের কারও রক্তশূন্যতা ছিল কি না এবং রোগীর যকৃৎ বা প্লীহার স্ফীতি আছে কি না, তা-ও জানতে হবে। শিশুর হিমোগ্লোবিন মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে সাত থেকে আট গ্রামের নিচে না নামলে সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
রক্তশূন্যতার প্রধান উপসর্গগুলো হলো শিশুকে ফ্যাকাশে ও দুর্বল দেখায়, ঘুমের পরিমাণ কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠে এবং শিশুর জিব, নখ, হাতের তালু ইত্যাদি সাদাটে হয়ে পড়ে।
রক্তশূন্যতার মাত্রা বেশি হলে শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়তে পারে, শরীরে পানি আসতে পারে এবং মারাত্মক হৃদ্রোগের (হার্ট ফেইলিওর) মতো জটিলতাও হতে পারে।
পরিবারের কারও থ্যালাসেমিয়া বা রক্তে অস্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতি থাকলে শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।
এ দেশে পরজীবী বা কৃমি সংক্রমণ শিশুদের রক্তাল্পতার একটি প্রধান কারণ। এমনকি সচ্ছল শহুরে পরিবারেও তা হয়। তাই শিশুর খাদ্য ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। শিশুর জ্বর দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে, পেট ফুলে গেলে এবং শরীরের ওজন কমে গিয়ে ফ্যাকাশে ভাব দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অভিভাবকের পুষ্টিজ্ঞানের অভাব এবং খাওয়ানোর ভুল পদ্ধতিও শিশুর রক্তাল্পতার কারণ হতে পারে।