দিনে তিনবার বা তার চেয়ে বেশিবার স্বাভাবিকের চেয়ে পাতলা পায়খানা হওয়াকে ডায়রিয়া বলে। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণজাতীয় পদার্থ বের হয়ে যায়। শরীরে পানিস্বল্পতা ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। সময়মতো পানিস্বল্পতা ও লবণের ঘাটতি পূরণ না করলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
সাধারণত অন্ত্রে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে ডায়রিয়া হয়। ডায়রিয়ার জীবাণু দূষিত খাদ্য ও পানির মাধ্যমে মানুষের পেটে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তির মল থেকে ডায়রিয়ার জীবাণুগুলো হাতের মাধ্যমে, মাছি বা তেলাপোকার মাধ্যমে, এমনকি অনেক সময় সরাসরি খাদ্য ও পানিতে সংক্রমিত হয়। এই দূষিত খাদ্য বা পানি গ্রহণ করলে অন্যরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
ডায়রিয়া হলে যে পানিস্বল্পতা ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়, তা পূরণ করাই মূল চিকিৎসা। খাওয়ার স্যালাইনে পানিস্বল্পতা দূর করা যায়। মারাত্মক পানিস্বল্পতার লক্ষণ দেখা গেলে রোগীকে শিরায় উপযুক্ত স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। এ জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাই ভালো।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়
১. মলত্যাগে স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করুন।
২. পায়খানা করার পর ও খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
৩. খাবার তৈরি করা ও পরিবেশন করার আগেও হাত ধুয়ে নিন। ব্যবহার্য থালা-বাসন, চামচ-বাটি ইত্যাদিও ভালো করে ধুয়ে নিন। এসব কাজে নিরাপদ পানি ব্যবহার করুন।
৪. ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ান।
৫. বাসি-পচা খাবার, মাছি বসা খাবার এবং বাইরের খোলা খাবার, শরবত বা ফলের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৬. রান্না করা খাবার বেশিক্ষণ বাইরে রেখে দিলে তাতে রোগজীবাণু দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সুতরাং খাবার খেয়ে নিন গরম গরম। বাড়তি খাবার ঠান্ডা করে রেখে দিন ফ্রিজে। পরে খাওয়ার সময় আবার ভালো করে গরম করে নেবেন।
৭. পরিষ্কার পাত্রে রাখা টিউবওয়েলের নিরাপদ পানি কিংবা ফোটানো পানি ঠান্ডা করে পান করুন। পানি ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হলে চুলায় পানি ফুটতে শুরু করার পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় ফোটাতে হবে। পানি ঠান্ডা হলে মাটির কলস বা কাচের জার বা বোতলে রাখুন। প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার না করাই ভালো।