ডায়াবেটিস একটি হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। দেহের অগ্ন্যাশয় যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে অথবা উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে শরীর ব্যর্থ হলে যে রোগ হয় সেটাই ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র।
এ রোগ হলে রক্তে চিনি বা শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। ইনসুলিনের ঘাটতি বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে শরীরের অক্ষমতাই এ রোগের মূল কথা।
ডায়াবেটিস নির্ণয় পদ্ধতি
ডায়াবেটিস মেলিটাস রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির উচ্চ স্তরের ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। পুরনো চিকিৎসা ধারা কিংবা ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসক ডায়াবেটিস সন্দেহ করেন। নির্ণয়ের জন্য রক্ষে চিনির স্তর পরীক্ষা করা হয়।
ফাস্টিং প্লাজমা গ্লুকোজ টেস্ট
এই পরীক্ষায় রোগীকে সারারাত অথবা অন্তত আট ঘণ্টা উপবাস থাকতে বলা হয়। এরপর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এ সময় স্বাভাবিক প্লাজমা গ্লুকোজ মাত্রা ১১০ মিগ্রা / ডিএল-এর কম থাকে। ১২৬ মিলিগ্রাম / ডিএল এর বেশি থাকলে সাধারণত ডায়াবেটিস মেলিটাস বা রোগীর ডায়াবেটিস হয়েছে বলে নির্ধারণ করা হয়। ১১০-১২৫ মিগ্রা / ডিএল স্তরকে দুর্বল উপবাস গ্লুকোজ বা ইম্পায়ার্ড ফাস্টিং গ্লুকোজ বলা হয়।
পোস্ট প্রান্ডিয়াল (পিপি) প্লাজমা গ্লুকোজ
এই প্রক্রিয়ায় খাবার খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর পরীক্ষা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় পিপি স্তর ১৪০ মিগ্রা / ডিএল-এর বেশি থাকলে তাকে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা হয়। আর ২০০ মিলিগ্রাম / ডিএল-এর বেশি থাকলে ডায়াবেটিস মিলিটাস হিবেবে নির্ধারণ করা হয়। পিপি স্তর ১৪০-১৯৯ মিগ্রা / ডিএল এর মধ্যে থাকলে তা সহনশীলতা মাত্রায় রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়।
র্যানডাম প্লাজমা গ্লুকোজ টেস্ট
এ প্রক্রিয়ায় রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা ২০০ মিগ্রা / ডিএল কিংবা তার বেশি থাকলে সাধারণত সরাসরি রোগীর ডায়াবেটিস উপস্থিতি নির্ধারণ করা হয়।
ওরাল গ্লুকোজ চ্যালেঞ্জ টেস্ট (ওজিটিটি)
এ প্রক্রিয়ায় শরীরে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর পরীক্ষা করা হয়। এটি বর্ডার লাইন ডায়াবেটিস ও ‘ইম্পায়ার্ড গ্লুকোজ টলারেন্স’ শনাক্তকরণে বেশ উপযোগী।
ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নির্ণয়ে এ পদ্ধতি বেশ কার্যকর। সকালে খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৬.১ মিলিমোল/লিটার বা তার চেয়ে বেশি এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৭.৮ মিলিমোল/লিটার বা তার চেয়ে বেশি হলে তা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হিসেবে শনাক্ত করা হয়।