বর্তমানে নবদম্পতিরা চান সংসার ও পেশাগত জীবন গুছিয়ে দু-এক বছর পর সন্তান নিতে। আবার প্রথম সন্তানের পর আরেকটা সন্তান নেওয়ার মধ্যে কেউ কেউ বেশ বিরতি চান। কোন সময় কী ধরনের জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার করলে ভালো হয়, এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকে। এর মধ্যে অন্যতম দুশ্চিন্তা হলো জন্মবিরতিকরণ বড়ি নিয়ে। এটা সবচেয়ে সহজ ও নির্ভরযোগ্য হলেও নানা প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন অনেকে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রজননক্ষম যেকোনো নারীই জন্মবিরতিকরণ বড়ি খেতে পারেন।
কাদের গ্রহণ করা উচিত নয়
• বয়স ৪০ বছরের ওপর।
• নতুন মা যাঁরা স্তন্যপান করাচ্ছেন।
• উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি বা ধমনিতে চর্বির আস্তর পড়েছে।
• ধমনি বা শিরায় রক্ত জমাট হওয়ার রোগ আছে যাদের।
• মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ইতিহাস।
• জন্ডিসের রোগী ও যকৃৎরোগ বা যকৃতের টিউমার আছে এমন রোগী।
• স্তন ক্যানসারের রোগী, মাইগ্রেনের রোগী।
সুবিধা
• এটি প্রায় ৯৯ শতাংশ কার্যকর ও নিরাপদ পদ্ধতি।
• অনিয়মিত মাসিকে নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
• মাসিকের সময়কার ব্যথা ও অন্যান্য মাসিক-পূর্ববর্তী উপসর্গ কমায়।
• মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের প্রবণতা কমায়।
• জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমায়।
• ডিম্বাশয়ের সিস্ট ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
• এটি একটি অস্থায়ী পদ্ধতি, তাই সন্তান নিতে চাইলে পিল বন্ধ করার তিন-চার মাসের মধ্যেই সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকে।
অসুবিধা
• নিয়মিত প্রতিদিন খেতে হয় তাই ভুলে যাওয়ার বা ডোজ মিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
• স্তন্যদানকারী মায়েরা খেলে বুকের দুধ কমে যেতে পারে।
• কনডম বা নিরোধকের ব্যবহারে যৌন সংক্রমণের ঝুঁকি কমে, এই সুবিধা পিলে নেই।
• জন্মবিরতিকরণ পিল গ্রহণের কিছু মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন: বিষণ্নতা, মাইগ্রেনের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, মাসিকচক্রের মাঝামাঝি রক্তক্ষরণ, স্তনে ব্যথা করা ইত্যাদি।
• বর্তমানে চতুর্থ প্রজন্মের স্বল্পমাত্রার পিলে ওজন বাড়া, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বি বাড়ার ঝুঁকি আগের পিলগুলোর তুলনায় কম।
কীভাবে খাবেন
মাসিক শুরু হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে শুরু করা যায়, তবে প্রথম দিন থেকে শুরু করাই ভালো। প্রতি রাতে খাবার খাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় খাবেন। বেশির ভাগ পিলের পাতায় দিন উল্লেখ করা থাকে, সেভাবেই খেতে হবে। টানা ২১ দিন খাওয়ার পর সাতটা আয়রন ট্যাবলেট থাকে। তারপর আবার আরেকটি নতুন পাতা খাওয়া শুরু করতে হবে।