গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

পেটে গ্যাস, বমি ভাব, পেট ফুলে ওঠে বা চিনচিন করে ব্যথা করে—এমন সমস্যা হলেই মুঠো মুঠো গ্যাস্ট্রিকের বড়ি খান, অথবা অ্যাসিডিটির সিরাপ খান। তাতে খানিকটা আরাম মেলে অবশ্য, কিন্তু সমস্যা থেকেই যায়। আপনি হয়তো জানেন না, পেটে একধরনের জীবাণু সংক্রমণ এর জন্য দায়ী হতে পারে। হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামের এই জীবাণু পাকস্থলী এবং পাকস্থলীর পূর্ববর্তী অংশ ডিওডেনামে বাসা বাঁধে, দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ সৃষ্টি করে, যাকে বলে গ্যাস্ট্রাইটিস। কখনো কখনো পাকস্থলীতে ক্ষত বা আলসার সৃষ্টি করে। পেপটিক আলসার ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য এই জীবাণুর একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। ধারণা করা হয়, পৃথিবীর জনসংখ্যার অর্ধেকই এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত।

পেট ফাঁপা, অরুচি, পেটব্যথা, বমি ভাব, গলা জ্বলা ইত্যাদি সাধারণ উপসর্গ ছাড়াও হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি সংক্রমণের জন্য পাকস্থলীতে ক্ষত হয়ে বমি বা মলের সঙ্গে রক্তপাত, রক্তশূন্যতা ইত্যাদিও হতে পারে। জীবাণুর অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য রক্তে অ্যান্টিবডি দেখা হয়, নিশ্বাসের ইউরিয়া ব্রেথ টেস্ট করা হয়, কখনো এনডোস্কোপি করে টিস্যু নিয়ে তাতে জীবাণু পাওয়া যায়। কয়েক ধরনের ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিকের মিশেল বেশ কিছুদিন ব্যবহার করার পর জীবাণু নির্মূল হয়, তবে আবারও হতে পারে। এই জীবাণু দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিকের বিপরীতে রেসিসট্যান্স তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে। ফলে নির্মূল করা কঠিন। এখন পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে কোনো টিকা কার্যকর নয়। তাই সতর্কতাই সবচেয়ে উত্তম পন্থা।

  • ওমিপ্রাজল-জাতীয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বছরের পর বছর খাওয়া বিপজ্জনক। এতে পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তিত হয়ে যায়, ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে, রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা লেগেই থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • খাবার প্রস্তুত, পরিবেশন ও খাওয়ার সময় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখুন। হাত ধোয়ার গুরুত্ব শিখুন। জীবাণুটি সাধারণত পানিবাহিত।
  • ধূমপান বর্জন করুন। কফি না খাওয়াই ভালো। চট করে ব্যথার ওষুধ খাবেন না। এগুলো পেপটিক আলসারের সমস্যা বাড়ায়।
  • গ্যাস্ট্রিকের সাধারণ উপসর্গ পাকস্থলীর ক্যানসারেরও উপসর্গ। তাই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাই ভালো।