অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বেশি নড়াচড়া করা বা ব্যায়াম করা, হাঁটাহাঁটি করা বারণ—এমন ধারণা অনেকেরই রয়েছে। কিন্তু এই ধারণা পাল্টেছে। বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নানা ধরনের ব্যায়ামকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিদেশে এ সময় মেয়েরা ব্যায়ামাগারে গিয়ে নানা ধরনের ব্যায়াম চর্চা করেন।
গর্ভকালীন ব্যায়ামের উপকারিতা কী? নিয়মিত ব্যায়ামে পেশিশক্তি বৃদ্ধি পায়, হৃদ্যন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ে। গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পায়ে রগ টানা, কোমর ব্যথা, পা ফোলার মতো সমস্যা কম দেখা দেয়। গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য একটা খুব পরিচিত সমস্যা। নিয়মিত ব্যায়ামে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। যাঁরা স্বাভাবিক প্রসব বা নরমাল ডেলিভারি আশা করছেন, তাঁদের জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। এতে শক্তি বাড়ে, মানসিক চাপও কমে। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক প্রসব ত্বরান্বিত হয়।
এখন জেনে নিন কী ধরনের ব্যায়াম নিরাপদ ও উপকারী। সাঁতার, হাঁটা, স্টেশনারি সাইক্লিং, ইয়োগা ইত্যাদি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য চমৎকার, নিরাপদ ও সহজ ব্যায়াম হিসেবে বিবেচ্য। তবে একজন বিশেষজ্ঞের অধীনে ব্যায়াম করা ভালো। তার আগে জেনে নেওয়া চাই কোনো কারণে ব্যায়ামে বিধিনিষেধ আছে কি না।
প্রথম তিন মাস থেকে শেষ পর্যন্ত দুটো গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম নিয়মিত চর্চা করা ভালো। এগুলো হলো স্কোয়াটিং আর পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ।
স্কোয়াটিং: প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তারপর হাঁটু ভাঁজ করে ধীরে ধীরে বসার ভঙ্গি করুন। পুরোপুরি বসবেন না, আধা বসা অবস্থায় থাকবেন। এই ব্যায়ামটি দিনে দুইবার, প্রতি সময়ে ১০ বার করে করবেন। যদি কষ্ট হয় তবে প্রথমে একবার করে শুরু করুন।
পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ: এই ব্যায়ামে গর্ভপাতের ঝুঁকি কমে। প্রসবের পর জরায়ুর পেশির স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা হয়, জরায়ু নিচে নেমে আসে না। পেলভিক মাংসপেশিগুলো শক্ত বা টানটান করে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। যেভাবে আমরা শক্তভাবে প্রস্রাব আটকে রাখি সেই ভঙ্গিতে। এই ব্যায়ামটি দিনে দুবার করতে হবে, প্রতি পর্বে তিন–চারবার করে করবেন।