পবিত্র মাহে রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম সূর্যোদয় থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার করা থেকে বিরত থাকেন। এখন আমাদের দেশে প্রায় ১৫ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে এবং সাথে চলছে গরমের দাবদাহ। এই অবস্থায় রোজা রেখে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া এবং সুস্থ থাকা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ।
রোজায় আমাদের অসচেতনতার কারনে আমরা কখনও কখনও পানিশূন্যতা, মাথাঘোরা, মাথাব্যথা, রক্তের সুগার কমে যাওয়া, অত্যধিক দুর্বলতায় আক্রান্ত হই। একটু সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই পুরো রমযান মাস আমরা ভাল থাকতে পারি। যারা ওজন কমাতে বা বাড়াতে চাই তাদের জন্যও রমযান মাস নিয়ে আসে সূর্বণ সুযোগ।আমার মতে কারও উচিত হবে না এই সুযোগ হাতছাড়া করার।
সেহেরীর খাবার:
সেহেরীর সময় হচ্ছে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার, তাই এটি যেন কোন ভাবেই বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদিও সারা দিনের ক্ষুধা সেহেরীর মাধ্যমে নিবারণ করা সম্ভব নয়, কিন্তু আমরা যদি খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখি তাহলে অনায়াসেই ক্ষুধাকে বিলম্বিত করতে পারি।
সেহেরীর খাবার নির্বাচনে নজর দিতে হবে
আমিষ, জটিল শর্করা ও খাদ্য আঁশের প্রতি। সেহেরীতে যা খাওয়া ভালো আর তা হচ্ছে, লাল চালের ভাত এক থেকে দেড় কাপ, মিক্সড সবজি ১ কাপ, মাছ অথবা মুরগী ১ টুকরা, ডাল ১ কাপ সাথে দই অথবা ননী বিহীন দুধ ১ কাপ।
ইফতারের
পুষ্টিকর খাবার:
আমাদের দেশে রোজা মানে খাবারের উৎসব। আমরা যা সারাবছর খাই না তা রোজার মাসে রোজা রেখেই খেয়ে ফেলি। কিন্তু রোজা আসলে ধর্মীয় বা বৈজ্ঞানিকভাবে এক ধরনের ডিটক্সিফিকেসন বা পরিশোধন বা পরিষ্কার পদ্ধতি যা আমাদের দেহ থেকে সারাবছরের ময়লা বা বর্জ্য দূর করে। অতিরিক্ত ভোজন করলে তা আর হয় না বরং আরও ক্ষতি-সাধিত হয়। রমযান মাসে অন্যসব মাসের মতই খেতে হবে। বেশি ডুবো তেলে ভাঁজা খাবার খাওয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে বা খেতে হলে অল্প তেল দিয়ে ভাঁজা খাবার খাওয়া যাবে তবে তাও পরিমাণ মত।
অনেকেই বলেন রোজা রাখতে পারি না এসিডিটি হয়। আসলে ইফতার ও সেহরিতে অতিরিক্ত তেল মসলা জাতীয় খাবার খেলে এই সমস্যা হয়। পারলে রমযান মাসে সাধারণের চেয়ে অল্প পরিমাণ খাবার কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খেয়ে আমরা সারাদিন সুস্থ্য ও একটিভ থাকতে পারি।
সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা মেনে চলতে একজন মানুষকে রোজার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে-
খেজুর : খেজুর হতে পারে ইফতারের একটি অন্যতম খাবার। খেজুর হচ্ছে চিনি, তন্তু বা ফাইবার, শর্করা, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের উৎস। ইফতারে দু-তিনটা খেজুরই শরীরকে দ্রুত চাঙ্গা করে দিতে পারে, তবে সাথে পানি পান করতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
লেবুর শরবত:
লেবুর শরবত শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তবে শরবতে কৃত্রিম রঙ মেশাবেন না। এ রঙে থাকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান।
বাজারে অনেক কৃত্রিম রঙ মেশানো শরবত পাওয়া যায়, সেসব অবশ্যই পরিহার করবেন।
কালোজিরা : কালোজিরার গুনাগুণ সম্পর্কে আমাদের নবী ১৪০০ বছর আগেই বলেছে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ হল এই কালোজিরা।
এখানে বেশকিছু ফলমূল রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
রোজায় দীর্ঘ সময় উপবাসের কারণে শরীরে পানির অনেক চাহিদা থাকে। সেহরী খাওয়ার পর যেন ৩-৪ গ্লাস পানি খেতে পারবেন এমন সময় হাতে রেখে খাবার গ্রহণ করুন। আবার ইফতারি থেকে সেহরী পর্যন্ত ৭-৮ গ্লাস পানি পান করুন। এতে অ্যাসিডিটির সমস্যা হবে না।
● অঙ্কুর ওঠা কাঁচাছোলা ভিটামিন সি-র খুব ভালো উৎস। প্রতিদিনের ইফতারির মেন্যুতে কাঁচাছোলাটা তাই নিশ্চিত করুন। সারাদিনের অনাহারের পর ভাজাপোড়া, তেল-মসলা শরীরের জন্য একদমই ভালো না। তা খেতে যতই মুখরোচক হোক না কেন। ইফতারিতে তাই দই-চিঁড়া, দুধ-কলা-ভাত বা দই-চিঁড়া-ফলের কাস্টার্ড শরীরের জন্য খুবই ভালো। আর্দ্র আবহাওয়ায় এই ধরনের সহজপাচ্য খাবারগুলো শরীরকে ঠাণ্ডা করে আর ত্বকের সজীবতা ধরে রাখে।
● ইফতারের পর থেকে রাতের খাবারের সময় পর্যন্ত পানি বা তরলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্যুপ, জুস, ফল, দই, লাচ্ছি, সালাদ এগুলো বারবার খাওয়া যেতে পারে। রোজার কটা দিন রাতের খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু বিশেষ নজর দিন। ইফতারির ভুঁড়িভোজের পর স্বাভাবিকভাবেই রাতের খাবার খেতে খেতে বেশ রাত হয়ে যায়। আর রাত যত বাড়তে থাকে আমাদের পরিপাকক্রিয়ার ক্ষমতা ততই কমে আসতে থাকে। এ কারণে রোজার সময়টাতে রেডিমিট বা মাংসের তৈরি রান্না একটু এড়িয়ে চলাই ভালো। রাতের খাবার তালিকায় গ্রিলড-চিকেন বা পেপারড-চিকেন অথবা মাছ সঙ্গে ভাত বা রুটি, সবজি, ডাল এগুলো রাখা যেতে পারে।
১. ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়া:
অনেকে মনে করেন ইফতারে ভাজা পোড়া না থাকলে ইফতারই হবে না। কিন্তু দিনভর অভুক্ত থাকার পর ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত, গরম খাবার পেটে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। পেট জ্বালাপোড়া করতে পারে।
এসব মুখরোচক খাবারের বদলে চিড়া-দই, লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, নুডুলস, নরম খিচুড়ি ইত্যাদি খেতে পারেন। সঙ্গে সবজি, ফল, সালাদ, মাছ বা মাংস বা ডাল বা ডিম থাকবে।
সন্ধ্যারাতের খাবারঃ
রোজার সময় সন্ধ্যারাতের খাবারের গুরুত্ব তেমন থাকে না। মনে হয়, খেতে হবে তাই খাওয়া। তার পরও কেউ যদি খেতে চান তাহলে যেন খাবার গুরুপাক ও বেশি হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। যেহেতু ইফতারিতে ডালের তৈরি খাবার বেশি হয়, .সেহেতু এ সময় ডাল বাদ দেওয়া যেতে পারে। এ সময় হালকা মসলায় রান্না করা মাছ ও সবজি থাকলে ভালো হয়। ইফতার ও সেহিরতে অনেক সময় সবজি খাওয়াটা বাদ পড়ে যায়। অনেকেই রমজানে সবজি একেবারেই পছন্দ করেন না। তাঁদের জন্য সন্ধ্যারাতেই সবজি খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এ রাতে খাবারে ছোট মাছও রাখা যেতে পারে। সেহিরর সময় কাঁটা বেছে মাছ খেতে অনেকেই বিরক্ত বোধ করেন।
সতর্কতা: উচ্চ রক্তচাপ ঔষধ উপর এবং কিডনি পাথর সমস্যার সঙ্গে যারা তাদের ডাক্তারের পরামর্শ করা উচিত.
পাকস্থলীর ulcers, হৃদয় বার্ন, পাকাশয়ের ও বিচ্ছেদ অন্ত্রবৃদ্ধি
রমজানের মধ্যে খালি পেটে বর্ধিত অ্যাসিড মাত্রা উপরোক্ত শর্ত বাড়া. এটা পাঁজর অধীনে পেট এলাকায় একটি জ্বলন্ত অনুভূতি হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন এবং গলা পর্যন্ত প্রসারিত করতে পারেন. মশলাযুক্ত খাবার, কফি, এবং কোলা পানীয় এই অবস্থার খারাপ. মেডিকেশন পেটে অ্যাসিড মাত্রা নিয়ন্ত্রণ উপলব্ধ. প্রমাণিত পাকস্থলীর ulcers এবং বিচ্ছেদের অন্ত্রবৃদ্ধি সঙ্গে মানুষ ভাল রমজানের আগে তাদের ডাক্তারের পরামর্শ করা উচিত
তাছাড়া ইফতারের পর ১৫-২০ মিনিটের জন্য বাইরে হেঁটে আসতে পারেন।এট রোজাদারের জন্য উপকারী।
রমজানের আরও টুকিটাকি টিপস পেতে আমাদের পেজের সাথে থাকুন।