মুখ ভরে গেছে ব্রণে। লাল লাল, দানাদার, কোনোটি বেশ উঁচু। আয়নার দিকে তাকালেই মন খারাপ হয়। কিশোর–তরুণ বয়সের একটা বড় দুশ্চিন্তা এই ব্রণ। এই বয়সে ব্রণ বেশি দেখা দেওয়ার বিষয়টি হরমোনজনিত। ছেলেদেরই এ সময় এটা বেশি হয়, কেননা পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেন এই ব্রণের জন্য দায়ী। কখনো কখনো মেয়েদের মধ্যে এন্ড্রোজেনের আধিক্য হলে ব্রণ বেশি হতে পারে। কিছু কিছু রোগে ব্রণের আক্রমণ বেড়ে যায়। যেমন মেয়েদের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, কুশিং সিনড্রোম, স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধের ব্যবহার, কিছু প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহারের কারণে ব্রণ হতে পারে। কারও পরিবারে বেশি ব্রণ হওয়ার ইতিহাস থাকে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কৈশোরে ব্রণ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। এটা এমনিতেই সেরে যায়। তবে কখনো কখনো সমস্যা একটু বেশি প্রকট হয়ে ওঠে, বড় বড় দানা হয়, পুঁজ জমে ভেতরে, ব্যথা করে, সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক অশান্তি। জেনে নিন এই ব্রণ সমস্যা নিয়ে কী করবেন।
• প্রথম কথা হলো, ব্রণ নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। সময় হলে এমনিতেই সারবে। স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ব্রণ বাড়িয়ে দেয়, তাই চাপমুক্ত থাকুন।
• মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখবেন। তার মানে এই নয় যে দিনে বারবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। বরং এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
• নখ দিয়ে ব্রণ খুঁটবেন না, নিজে নিজে চেপে পুঁজ বা রস বের করার চেষ্টা করবেন না। পিন দিয়ে খোঁচাবেন না। এতে স্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে। সংক্রমণের ভয়ও থাকে।
• গরম বাষ্প নেওয়া বা ভাপ নেওয়ার কোনো উপকার আছে বলে প্রমাণিত হয়নি।
• ভাজাপোড়া খেলে ব্রণ বাড়ে—এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার (যেমন মিষ্টি, চকলেট ইত্যাদি) ব্রণের প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়।
• সমস্যা তীব্র না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ক্রিম ব্যবহার করা যায়। সমস্যা খুব বেশি তীব্র হলে মুখে খাওয়ার ওষুধ (কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, ভিটামিন ‘এ’) খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, এসব ওষুধ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ছাড়া কখনোই খাওয়া ঠিক নয়।
• ব্রণ–পরবর্তী জটিলতা—যেমন ত্বকে গর্ত, স্থায়ী দাগ ইত্যাদি দূর করতে লেজার, ডার্মারোলা ইত্যাদি পদ্ধতির প্রয়োগ করা যেতে পারে।