হেপাটাইটিস এ

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

হেপাটাইটিস এ একটি সংক্রামক রোগ। যে কারোরই এই রোগ হতে পারে। মৃদু বা হাল্কা হেপাটাইটিস এ এর ক্ষেত্রে তেমন কোন চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই যারা এই রোগে আক্রান্ত হন তারা কোন রকম যকৃতের ক্ষতি ছাড়াই সু্‌স্থ হয়ে ওঠেন।

হেপাটাইটিস এ কি

হেপাটাইটিস ভাইরাস গুলোর মধ্যে হেপাটাইটিস এ ভাইরাস অন্যতম যা প্রদাহ সৃষ্টি করায় যকৃতের কার্যক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটে। দূষিত খাবার ও পানি গ্রহণ এবং আক্রান্ত ব্যক্তি সংস্পর্শে আসলে এই রোগ হয়।

হেপাটাইটিস এ হয়েছে কি করে বুঝবেন

হেপাটাইটিস এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার এক মাস পর পর্যন্ত এর কোন লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয় না।

এক্ষেত্রে সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়:

  • অবসাদ অনুভব করা
  • বমি বমি ভাব হওয়া এবং বমি করা
  • পেট ব্যথা
  • ক্ষুদা মন্দা
  • হাল্কা জ্বর
  • গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব
  • মাংসপেশীতে ব্যথা
  • চুলকানি
  • চোখ এবং শরীরের চামড়া হলুদ হয়ে যাওয়া

 কখন ডাক্তার দেখাবেন

হেপাটাইটিস এ’র লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

কি ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে

  • রক্ত পরীক্ষা
  • শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা

কি ধরণের চিকিৎসা আছে

হেপাটাইটিস ‘এ’র জন্য নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। এরপরও নিচের বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত :

  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেয়া
  • বমি বমি ভাবের ফলে কোন কিছু খেতে ইচ্ছে না হলে সারাদিন অল্প অল্প করে হালকা ও সহজে হজম হঢ এমন খাবার খাওয়া
  • প্রচুর পানি/তরল পান করা
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহণ
  • নেশা ও মদ জাতীয় দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকা

জীবন যাপন পদ্ধতি

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • খাবার ভালো করে সিদ্ধ করা
  • খালি,বাসী,পঁচা খাবার এবং হোটেলের খাবার না খাওয়া
  • রান্না করার আগে হাত ধোয়া
  • খাওয়ার আগে হাত ধোয়া
  • দূষিত পানি না খাওয়া
  • পায়খানা ব্যবহারের পর হাত ভালোমত পরিষ্কার করা
  • আক্রান্ত ব্যক্তিকে অন্যের জন্য খাবার প্রস্তুত করা থেকে বিরত থাকা

বিশ্রাম,পথ্য এবং বাড়তি সতর্কতা

  • রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে হবে
  •  রোগীকে অন্যান্য কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে
  • সুষম খাদ্য যেমন- শাক সবজি ও ফলমূল খেতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

হেপাটাইটিস এ কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

  •  হেপাটাইটিস ‘এ’ প্রতিরোধ করার জন্য হেপাটাইটিস ‘এ’ টিকা (ভ্যাকসিন) দিতে হবে
  •  হেপাটাইটিস ‘এ’ যেসব এলাকায় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সে সমস্ত এলাকায় বেড়ানোর ক্ষেত্রে ফল, সবজি এবং অন্যান্য খাবার পরিষ্কার রাখতে হবে
  • বারে বারে হাত ভালোমত পরিষ্কার করতে হবে

হেপাটাইটিস ‘এ’ কেন হয় ?

বিশেষ এক ধরণের জীবাণু (হেপাটাইটিস ‘এ’) দ্বারা যকৃতে সংক্রমণের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ‘এ’ হয়ে থাকে।

কাদের হেপাটাইটিস ‘এ’ হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে ?

যাদের হেপাটাইটিস ‘এ’ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে তারা হলেন-

  • দূষিত পানি পান করলে এবং দূষিত খাবার খেলে
  • আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবেশন করা (যদি সে হাত ভালোমত না পরিষ্কার করে) খাবার খেলে
  • হেপাটাইটিস ‘এ’ প্রবণ এলাকায় ভ্রমণ করলে
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকলে
  •  হেপাটাইটিস ‘এ’ আক্রান্ত ব্যক্তির  রক্ত গ্রহণ করলে
  • মাদক সেবন করলে

হেপাটাইটিস ‘এ’ হলে কি ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে?

  • কোন কোন রুগীর ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস ‘এ’র লক্ষণ ও উপসর্গ  স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী স্থায়ী হয়
  • আবার কারো কারো ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ ভালো হয়ে যাওয়ার তা পর পুনরায় ফিরে আসে
  • কখনো কখনো যকৃতের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায় ও যকৃত অকার্যকর হয়ে পড়ে