ভূমিকম্পের টিপস

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

ভূমিকম্পের পূর্বে যা করণীয়ঃ

  • জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুযায়ী অবকাঠামো নির্মান করা।
  • নিয়মিত ইউটিলিটি সার্ভিস যেমন- গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের লাইন সঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করা।
  • বাড়ী বা প্রতিষ্ঠানের নির্গমনের পথগুলি পূর্বেই চিহ্নিত করে রাখা যেন জরুরী অবস্থায় ব্যবহার করা যায়।
  • বাড়ীতে বা প্রতিষ্ঠানের ভারী আসবাবপত্র সমূহ এ্যাংকর বা হুক দিয়ে আটকে রাখা যাতে ভূমিকম্পের সময় পড়ে না যায়।
  • ভারী বস্তু যেমন- স্যুটকেস, ব্যাগ, কার্টুন ও ব্যবহার্য অন্যান্য দ্রব্য সমূহ উপরে না রেখে ভুমিতে বা ফ্লোরে রাখা।
  • জরুরী টেলিফোন নং যেমন- ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, এম্বুলেন্স, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ব্লাডব্যাংক ও অন্যান্য জরুরী ফোন নম্বর সংরক্ষণ করা এবং দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শিত করার ব্যবস্থা করা।
  • নিয়মিত অগ্নিনির্বাপন, উদ্ধার, ইভাকুয়েশন মহড়া পরিচালনা করা।
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করা।
  • পরিবারের সদস্যদের সাথে দূর্যোগকালীন করনীয় সম্পর্কে আলোচনা করা।
  • জরুরী প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদি সংরক্ষণ করা, যেমনঃ টর্চলাইট, রেডিও (অতিরিক্ত ব্যাটারী সহ), বাঁশি, হ্যামার, হেলমেট/কুশন, শুকনো খাবার, খাবার পানি, ঔষধসমগ্রী, ফাষ্টএইড বক্স, মোবাইল ফোন, শিশুর যত্নের সামগ্রী ও অন্যান্য জরুরী সামগ্রী

ভূমিকম্পকালীন করণীয় বিষয়সমুহ-

  • আতংকগ্রস্থ না হয়ে ধীর স্থির থাকা। সম্ভব হলে পরিবারের সকলকে নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নেয়া।
  • যদি ব্যক্তির অবস্থান কোন বহুতল ভবন, শপিং মল, থিয়েটার বা সহজে নির্গমনযোগ্য নয় এমন স্থানে হয়, সেক্ষেত্রে দৌড়ে বের হয়ে আসার চেষ্টা না করা।
  • মাথায় হেলমেট/কূশন পরিধান করে দ্রুত শক্ত টেবিল, খাট এর নিচে আশ্রয় গ্রহন করা অথবা কলাম বা বীমের পাশে আশ্রয় গ্রহন করা।
  • বুক সেলফ, আলমীরা বা শোকেস জাতীয় ভারী ফার্নিচার এর নিকট থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা।
  • রান্নাঘরে থাকলে দ্রুত গ্যাসের লাইন বন্ধ করে বের হয়ে আসা।
  • সম্ভব হলে বিদ্যুৎ বা গ্যাসের লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বা সুইচ বন্ধ করা।
  • ঝুলন্ত কোন বস্তু (যেমন- ঝাড়বাতি) বা জানালার নিকট থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা।
  • কখনোও লিফট ব্যবহার না করা।
  • ভবনের ছাদ, জানালা বা অন্য কোন স্থান থেকে লাফিয়ে না পড়া।
  • ভবনের বাহিরে অবস্থানকালীন ভূমিকম্প হলে ভবনে প্রবেশ না করা এবং গাছপালা, বহুতল ভবন, ব্রীজ, বিদ্যুতের খুঁটি, সাইনবোর্ড বা অন্য কোন অবকাঠামোর নিকটে আশ্রয় না নিয়ে খোলা জায়গায় নিরাপদে অবস্থান করা।
  • গাড়িতে থাকলে গাড়ী থামিয়ে গাড়ীর ভিতর অবস্থান করা। এক্ষেত্রে ফ্লাইওভার, ওভারব্রীজ, বহুতল ভবন, বড় গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরবর্তী খোলা স্থানে গাড়ী পার্কিং করা।
  • নদী বা পুকুরে অবস্থান করলে দ্রুত উপরে উঠে আসা।

ভূমিকম্প পরবর্তী করণীয়

  • মোবাইল ফোন বার বার ব্যবহার করে চার্জ নষ্ট করা যাবে না এক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের চার্জ সংরক্ষণ করতে হবে।
  • বড় ভারী কোন বস্তুর নীচে চাপা পড়লে অথবা টানা হেচড়া করে শরীরের শক্তি নিঃশেষ করা যাবে না, সেক্ষেত্রে জরুরী বাহিনীর সাহায্য পাবার জন্য কমপক্ষে ৭২ ঘন্টা বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
  • মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী আনার জন্য পুনরায় রুমে বা ভবনে প্রবেশ করা যাবে না বা সময় নষ্ট করা যাবে না, মনে রাখতে হবে সম্পদের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশী।
  • ভূমিকম্পের প্রথম ঝাকুনির পর পুনরায় ঝাকূনী হতে পারে, সেজন্য বাহিরে খোলা জায়গায় একত্রিত হওয়া এবং অবস্থান গ্রহন করা।
  • ফাটল ধরা কোন ভবনে প্রবেশ না করা।
  • গ্যাস, বৈদ্যুতিক গোলযোগ বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার কোন ঝুঁকি থাকলে নিরাপদে অবস্থান করা।
  • সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে রেডিও ও অন্য বেতার বার্তা শোনা।
  • জরুরী বাহিনীকে উদ্ধার তৎপরায় সার্বিক সহযোগিতা করা।
  • প্রশিক্ষণ না থাকলে চাপা পড়া রোগীকে টেনে হেচড়ে বের না করা।
  • প্রশিক্ষিত হলে আহতব্যক্তিকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা।
  • অগ্নি নির্বাপন, উদ্ধার, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করা।
  • দূর্গত মানুষের আশ্রয়, খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা।
  • পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠিত করা।
  • এলাকার রাস্তাঘাটের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ ও পূনঃ নির্মানের ব্যবস্থা করা।
  • আইন শৃংখলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।
  • উদ্ধারকারী ও অন্যান্য সংস্থাকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা।
  • আহত, অসহায় ও সর্বহারা মানুষদের সান্তনা প্রদানের মাধ্যমে মনোবল ঠিক রাখা।
  • মৃত ব্যক্তিদের সৎকার করা এবং মৃত গবাদি পশু মাটিতে পুঁতে ফেলা।
  • ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যুৎ লাইন, গ্যাস লাইন, পয়ঃনিষ্কাশন লাইন ইত্যাদি মেরামত ও পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে যে, ভাঙ্গা বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার ইত্যাদি পরীক্ষা না করে তাতে হাত দেওয়া যাবে না।
  • ত্রান সামগ্রী সুষ্ঠ বিতরণে সহায়তা করা।
  • ধ্বংসস্তুপ ও আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা করা।
  • সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থার কাজের মধ্যে সমন্বয় করা।
  • আপনি যদি কোন আবদ্ধ কক্ষে আটকে পড়ে থাকেন এবং আপনার ডাক উদ্ধারকারীগণ শুনতে না পায় তাহলে শক্ত কোন কিছু দিয়ে শক্ত জায়গায় জোরে জোরে আঘাত করে উদ্ধারকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন।