নারীর জন্য জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষা

শেয়ার করুন

সুচিপত্র

নারীরা পরিবারের সবার প্রতি যত্নশীল। কার কোন ওষুধ লাগবে, কার কখন পরীক্ষা–নিরীক্ষা দরকার, সেসব তারাই খেয়াল করেন। কিন্তু নিজের বেলা? সবাই ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকব কিংবা সন্তানের পরীক্ষা, বাড়িতে অতিথি আসবে ইত্যাদি বাহানায় চিকিৎসকের কাছে না যাওয়া, শুধু শুধু টাকা খরচের ভয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা না করাই নারীদের স্বভাব।

এ জন্যই নারীদের বেশির ভাগ রোগ শনাক্ত হয় দেরিতে, জটিল আকার ধারণ করার পর। কিন্তু একটু নিজের প্রতি খেয়াল রাখা, নিজের বিষয়ে সচেতন থাকার চর্চা করলে এড়ানো যায় অনেক বিপর্যয়। কোনো রোগবালাই বা সমস্যা–উপসর্গ না থাকলেও বিশেষ বয়সে বিশেষ সময়ে নারীদের কিছু রুটিন পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা উচিত। একে বলা হয় স্ক্রিনিং। সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল নারীদের জন্য অবশ্যকরণীয় কিছু স্ক্রিনিংয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

পুরুষদের মতো যেকোনো নারীকে চল্লিশ পেরোলেই প্রতিবছর অন্তত একবার রক্তচাপ মাপতে হবে, করতে হবে রক্তে শর্করা ও চর্বিনির্ণয়ের পরীক্ষা। মাঝেমধ্যে একটা সাধারণ রুটিন ব্লাড কাউন্ট (রক্তের হিমোগ্লোবিন ও কোষ গণনা হয় এ পরীক্ষায়) থেকে একজন চিকিৎসক নারীস্বাস্থ্য বিষয়ে অনেক তথ্য বা ক্লু পান। কিডনির অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিতে পারে সেরাম ক্রিয়েটিনিন। বিশেষ করে যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের তো কিডনি পরীক্ষা জরুরি। এর সঙ্গে প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষাও করে ফেলা ভালো। এসব পরীক্ষাও বছরে একবার করানো প্রয়োজন। বছরে একবার চোখ দেখিয়ে নিন। একবার দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যান।

দেশে স্তন ক্যানসারে ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক। প্রত্যেক মেয়ের উচিত প্রতি মাসে নিজের স্তন নিজেই পরীক্ষা করা। কোনো অসংগতি লক্ষ করলে সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চল্লিশ পেরোনোর পর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে প্রতিবছর একবার স্তন পরীক্ষা করিয়ে নিন। প্রয়োজনে তিনি স্তনের আলট্রাসনোগ্রাম কিংবা ম্যামোগ্রাম করতে বলবেন।

২১ বছর বয়স থেকে প্রতি ৩ বছর অন্তর জরায়ুমুখের প্যাপ স্মেয়ার পরীক্ষা করানো উচিত।

পঞ্চাশ বছর বয়স পেরোলে মলে রক্তের উপস্থিতি নির্ণয়ের পরীক্ষা করানো উচিত। এ পরীক্ষায় কোনো সমস্যা দেখা গেলে চিকিৎসক অন্ত্রের ক্যানসার নির্ণয়ের অন্যান্য পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন। নারীদের মধ্যে থাইরয়েডের সমস্যা প্রকট। থাইরয়েড সমস্যার উপসর্গগুলো জানুন এবং সন্দেহ হলে পরীক্ষা করে নিন। সন্তান ধারণকালে বা সন্তান নেওয়ার আগে রক্তে শর্করা, হিমোগ্লোবিন ও থাইরয়েড টেস্ট করে ফেলতে হবে।